মেসবাহ য়াযাদ'এর ব্লগ
মনটা বেজায় ভাল
১৪ ডিসেম্বর আমার চাকরত্বের ৬ বছর পূর্ণ হল। কাল ১৫ তারিখ চাকুরীতে ইস্তফা দিলাম। ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে অপেক্ষায় ছিলাম। মনের আনন্দে দুপুরে কয়েকজন সহকর্মীকে খাওয়ালাম। মোরগ-পোলাও...। সারা অফিসের কেন্দ্রবিন্দু- আমার ইস্তফাপত্র। কারো ধারনা, কিছু না বলে আমাকে নিরিবিলি ছেড়ে দেবে। কারো কারো মতে, আমাকে ডাকবেন। ভাল অফার দেবেন। রাখার চেষ্টা করবেন। আমার মতামত জানতে চাইলে আমি হাসি। তেমন কিছু বলিনা।
ডাক আসবে, জানি। সারাদিন গেল। ধৈর্য্যধারণ অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। ৫.৪৬ মিনিটে ডাক আসলো। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ আমার সাথে কথা বলতে চায়। রুদ্দদ্বার বৈঠক হল। ওপারের মানুষটি সাকুল্যে ৬টি বাক্য বললেন। আমি শুধু উত্তর দিলাম। বাড়তি মাত্র ২টি বাক্য বললাম। আমাদের দুজনের মোট বাক্য বিনিময় হল- ১৫টি।
০ এইটা কী পাঠিয়েছ ?
০০ নিশ্চুপ
০ কেন যেতে চাচ্ছো, সমস্যা কী ?
০০ ভাল একটা অফার পেয়েছি
৫ হাজার টাকার কমতো নয়ই....!!!
খুব বেশি দিন আগের কথা না। অনেকগুলো ব্রিজ তখনো হয়নি। ঢাকায় আসতে চাইলে লোকজনের পুরা দিন চলে যেত। সকালে রওয়ানা করলে মধ্যরাতে এসে ঢাকায় নামতো। বিশেষ করে ঈদ বা অন্য কোনো ছুটিতে মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিলনা। ফেরি পারাপার ছিল। ফেরির জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে থাকতে হত। আহ, কত কষ্ট ছিল মানুষের !
বিশেষ করে যমুনার ওপারের লোকজনের অবস্থা ছিল বেশি খারাপ। ধরুন আপনার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। বিশেষ প্রয়োজনে ঢাকায় আসতে হবে আপনাকে। সকালের বাসে রওয়ানা হলেন। নগরবাড়ি ঘাটে পোঁছে গাড়ীর লাইনে পড়লেন। ৫/৭ ঘন্টা পরে ফেরিতে উঠলেন। ফেরি চললো ২/৩ ঘন্টা। আরিচায় আসলেন। তারপর ঢাকায় আসতে আরো ২/৩ ঘন্টা। মানে বাড়ি থেকে বেরুনোর পর আপনার কমপক্ষে ১০/১২ ঘন্টা লাগলো। একইভাবে বৃহত্তর রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, রাজশাহীর লোকজনের অবস্থা ছিল।
আপডেট : এবি'র পিকনিক ২০১০
ইতোমধ্যে এবির পিকনিকের সব প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মাসুম ভাই একটা স্পট যোগাড় করে দিয়েছেন। তারে আমরা এবিবাসী সবাই থ্যাংকু জানাই। গাড়ীর সাথে কথা হয়েছে। বাবুর্চির কাছ থেকে মেন্যুর হিসাব নেয়ার পাশাপাশি বাবুর্চির শিডিউল নেয়া হয়েছে। পিঠাওয়ালার সিডিউলও নেয়া হয়েছে। তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ফাইনাল করা হয়েছে। তাইলে আর কী কী বাদ রইলো ? সবার চাঁদা দেয়াটা। সে ব্যাপারে সর্বসম্মতিতে আমরা ১৭ ডিসেম্বর ছবির হাটে আড্ডাবো আর চাঁদা সংগ্রহ করবো। এ যাবৎ যারা যাবেন বলে নিশ্চিত করেছেন, তাদের মধ্যে আছেন :
এবি'র পিকনিক সংক্রান্ত বিশেষ সংবাদ
অত্যন্ত আনন্দচিত্তে জানানো যাচ্ছে, ইতোমধ্যে এবির পিকনিকের প্রায় সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সবার অবগতির জন্য পিকনিকের বিস্তারিত জানানো হলো:
পিকনিকের তারিখ : ২৪ ডিসেম্বর ২০১০, শুক্রবার
যাত্রার সময় : সকাল ৭.৩০ টা ল্যাবএইড... ৮:০০ তে শাহবাগ যাদুঘরের সামনে... ৮:৩০ এ সংসদ ভবনের সামনে রাজধানী স্কুলের গেইটে
যাত্রার স্থান : ল্যাবএইড, শাহবাগ যাদুঘর এবং সংসদ ভবনের সামনে রাজধানী স্কুলের গেইট
পিকনিকের স্থান : গাজীপুর এলাকার কোনো এক বাগান বাড়ি (কৃতজ্ঞতা: শখত মামা মানে আমার প্রিয় দুলাভাই আর আপনাদের শওকত হোসেন মাসুম ভাই)
খাবার : পোলাউ, দেশি মুরগীর রোস্ট, গরুর গোশত, মিক্সড সব্জী, সালাদ, মিনারেল ওয়াটার, সফট্ পানীয়... এবং সারাদিনব্যাপি শীতের ভাঁপা পিঠা... বিকালে একখান করে কমলা খাওয়ানোর ইচ্ছা আছে...
চাঁদা (জন প্রতি) : ৫০০ টাকা (এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩৫ জন সদস্য লাগবে... অন্যথায় আমরাতো আছিই ... )
আমি অমুক এই মর্মে শপথ করছি যে...
সাঈদের পিকনিক সংক্রান্ত পেচ্ছাপেছি পোস্টটা বেশ জমে উঠেছে।
আমি ব্যস্ত মানুষ, সময় পাই না। তারপরও আড্ডা, পিকনিক আর
পেচ্ছাপেছির কথা শুনলে শরীরের মধ্যে কেমন জানি প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে যায়।
আমি সময় বের করে ফেলি। তো যা বলছিলাম...
ছোটদের, বড়দের, সকলের... অনুরোধ, আবেদন আর নিবেদনের পাশাপাশি
মুঠোফোনে এসএমএস এসবের কারনে একটু সময় বের করে নেবার ব্যাপারে
চেষ্টা করে সফল হয়েছি। অতএব,
প্রিয় ভাই, বোন, বন্ধুরা-
আমি অমুক এই মর্মে শপথ করছি যে, আগামী ডিসেম্বর মাসের যে কোনো
শুক্রবার সবার সম্মিলিত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে এবি বন্ধুদের বাৎসরিক পিকনিকের
জন্য যে স্থান নির্ধারিত হবে- তার সাথে আমি সম্পৃক্ত থাকবো এবং
পিকনিকটি সম্পূর্ণভাবে সফল করার জন্য আমার তরফ থেকে যা যা করার
তা অবশ্য আমি সুচারুরুপে সম্পন্ন করবো।
ক খ গ ঘ ঙ...
ক
প্রতি ঈদেই মোটামুটি কোরবানী হয়ে যাই। এবার আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নো কোরবানী। যদিও কোরবানী সিনেমার কোরবানী কোরবানী কোরবানী...গানটারে আমি ভাল পাই। ছোট ছেলের গত ঈদের ৩/৪ সেট জামা এখনও ভাঁজ খোলা হয়নি। কারন হচ্ছে- সেগুলো নাকী শীতের কাপড়... বৌ বললো। শুনে আমি বগল বাজাই। বৌরে বুঝতে দেই না। বড় ছেলেরে বললাম, কী লাগবে? কিছুই লাগবেনা, বললো। আমি আবার বগল বাজাই। গত ঈদের সময় একটা জামার কাপড় কিনে দিয়েছিলাম ছেলেদের মায়েরে। সেলাই করার সময় ছিল না। এবার ঈদের আগে সেলাই করে নিয়েছে। শুধু সেলাইয়ের টাকা দিলেই হবে... বললো। আমি আনন্দে বগল বাজাতে বাজাতে বগল ব্যথা করে ফেলি।
খ
ঈদের সপ্তাহ খানেক পরে ছেলের পরীক্ষা। বেশি দিন বেড়াতে পারবে না। স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে এমাসের ৩ তারিখ। জানতে চাইলাম, কবে যাবে ? কয়েকদিন পরেই যাই... বললো। তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই। গত বৃহস্পতিবার জানতে চাইলাম, শুক্রবার যাবে কি না ? বললো, একটা বিয়েতে যেতে হবে শনিবার দুপুরে। খুব কাছের মানুষের বিয়ে। না গেলে ইজ্জত থাকে না। সব বান্ন্ধবীরা জামাইসহ যাবে... সুতরাং আমারও যাওয়া লাগবে। বললাম, ঠিক আছে যাবো। আমার সম্মতি পেয়ে মোনালিসা মার্কা একখান হাসি দিয়ে বললো, ১ হাজার টাকা দাওতো ? বিয়েতে সবাই মিলে গিফট কিনবে, সেজন্য চাঁদা... । ছেলে বললো, ১ হাজার না বাবা। ৫০০ টাকা লাগবে। মা খালামনীদের সাথে কথা বলেছে ফোনে। আমি শুনেছি...। আমি দুজনকেই বিশ্বাস করলাম। মনের দুঃখে ছেলেকে বললাম, বাবারে অন্য মানুষ কথা বলার সময় সেকথা শুনতে হয়না...। তো, ১ হাজার টাকা দিলাম। কৌতুহলবশত জানতে চাইলাম, কার বিয়ে ? যা বললো... সংক্ষেপে হচ্ছে, ছেলের স্কুলের ক্লাসের বন্ধুর মায়ের দেবরের বিয়ে... খুবই নিকটাত্মীয়!
গ
৪৩ কোটি ৫৪ লক্ষ ৫৬ হাজার সেকেন্ড সময় এক সাথে...!
পূর্বের ১২ বছরের কথা না হয় নাই বললাম। লাইসেন্স পাবার পরের হিসাবটাই না হয় বলি। ৪৩ কোটি ৫৪ লক্ষ ৫৬ হাজার সেকেন্ড, ৭২ লক্ষ ৫৭ হাজার ৬০০ মিনিট, ১ লক্ষ ২০ হাজার ৯৬০ ঘন্টা, ৫ হাজার ৪০ দিন, ১৬৮ মাস মানে ১৪ বছর একসাথে কাটিয়েছি আমি এবং আমরা। আজ আমাদের সেই দিনটি। ১৯৯৬ সালের এদিনে আমাদের দুই পক্ষের সবাই মিলে আমাদেরকে এক সাথে থাকার জন্য পারিবারিক ও আইনগত ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সেজন্য আমি এবং আমরা তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
সবার ভালোবাসা আর আশীর্বাদ নিয়ে আমাদের আগামী দিনগুলো যাতে হাসি-আনন্দে কেটে যায়, আজকের এদিনে সেটাই চাই। সবার জীবন মঙ্গলময় হোক।
আমার কলিগেরা
আমার কলিগদের মধ্যে কতিপয় কলিগের কাহিনী বলবো আজ।
রোমানা :
রোমানার কথা মনে আছে ? এডমিনে কাজ করতো। সেই যে মেয়েটা। যে শুধুমাত্র গল্প শুনে শুনে আমাদের টুটুলের প্রেমে পড়েছিল। কিন্তু বেচারি রোমানা জানতো না, টুটুল ডুবে ডুবে জল খাচ্ছে নাজের সাথে। মনের দুঃখে অবশেষে করলো কী, টুটুলের হলুদের দিন নিজের হলুদ এবং বিয়ের দিন নিজের বিয়ের তারিখ ঠিক করেছিল। অবশ্য বাবুর ক্ষেত্রে একটু পিছিয়ে পড়েছিল। গত মাসে রোমানা মেয়ের মা হয়েছে। আশায় আছি, টুটুলের ছেলের সাথে যদি রোমানার মেয়ের একটা কিছু হয়...
নাহিদ :
মনে পড়া বন্ধুদের আপডেট খবর
সারা দেশ জুড়ে আছে কত শত বন্ধুরা। সে একটা সময় ছিল আমাদের। এবিতে সে সময়কার অনেক বন্ধু এখন লিখছে। তাদের দেখে স্মৃতির জাবর কাটতে বসলাম। আজ অনেক কথা, অনেকের কথা মনে পড়ছে। খুলনা মানেই হাসিনাদের নুরপুরের কলোনীর বাসা। সামনে খুলনা বেতার কেন্দ্র। রাত জুড়ে আড্ডা। পারশে (বানানটা ঠিক হল কি ?) , ভেটকি , চিংড়ি কত মাছ যে খেয়েছি। আর খেয়েছি হাসিনার মায়ের স্নেহমাখা গালি। সেই হাসিনা এখন খুলনা ছেড়ে ঢাকায়। দিব্যি ঘরনী। চাকরী করে ওয়াপদাতে। আইচগাঁতির আ আ মামুন চট্টগ্রামে। বাবু ব্যবসা করছে, খুলনাতেই। টারজানও খুলনায়। ওসি ইবিএল ব্যাংকে, খুলনায়। চাপা মামুন পুলিশে, যশোর পোস্টিং। ডা. এনাম চিটাগাং ডাক্তারি করছে। রাহা বাংলা ভিশনে কাজ করে। হাসান ভাই খুলনায়, প্রথম আলোতে। দীবা ঢাকায়, এইচএসবিসিতে...
রাতের দুই গল্প
গত শুক্রবারের ঘটনা
অন্য রকম রাতের পৃথিবী
যথারীতি গত শুক্রবারও (৩ সেপ্টেম্বর) ছিল আমার রাতের ডিউটি। মোটামুটি দিনের বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। বাসায় কেউ নেই। বৌ আর বাচ্চাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। এবার একটু আগেই চলে গেছে ওরা। ছেলেটার স্কুল বন্ধ। কী করবে ঢাকায় থেকে? তারপরও ছোটটার টিকা খাওয়ানোর জন্য ৩০ তারিখ পর্যন্ত রয়ে গেল ঢাকায়। ৩১ তারিখ সকালের দিকে চলে গেল ওরা।
ক’এর মা, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্মৃতির জাবর কাটা
তিন প্লাস বয়স হলেও কেন জানি অনেক স্মৃতি মনে আছে তার। সেকালে হয়ত ভেজাল কম খাওয়া হত বলেই মাথাটার ভেতরে গ্রে মেটার একটু বেশিই ছিল। অথবা এমন হতে পারে, কারো কারো মেধাটা একটু এক্সট্রা অর্ডিনারি ধরনের হয়। সেরকম একজন হচ্ছে আজকের সুত্রধর। ধরে নেই সুত্রধরের নাম ‘ক’।
উদ্দেশ্যহীন, শান্তিময় জীবন...
এই জীবনে লেখাপড়া করছি মাত্র কয়েক ক্লাস। বড় ভাই ১০ ক্লাস পড়ার পর হঠাৎ করে ঘোষনা দিলেন, তিনি আর ১১ ক্লাসে ভর্তি হবেন না। টেকনিকেলে পড়বেন। কী আর করা। বাবা মনের দুঃখ মনে চেপে ভাইয়াকে ভর্তি করে দিলেন টেকনিকেলে। তারপর বড়াপা। আমরা পিঠাপিঠি না হলেও পড়তাম এক ক্লাসে। ১২ ক্লাস পাশ করার পর বড়াপার বিয়ে হয়ে গেল। এবারো বাবা মনে কষ্ট পেলেন।
রাতের পৃথিবী
ল্যাবএইডে কাজ করি ৫ বছর ৮ মাস। এতদিন একসাথে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করিনি। ছাড়বো ছাড়বো করেও ল্যাবএইড আর ছাড়া হয়নি। অনেকদিন মেজাজ খারাপ করে ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম। তারপরও ছাড়া হয়নি। ছাড়ার আগে সংসার, সন্তানের কথা মনে হত। চাকরীর বাজারেও আকাল। চাকরী যে পাইনা, তা নয়। কিন্তু ব্যাটে বলে আর এক হয়না। আমি যাযাবর কিসিমের মানুষ। বাঁধা ধরা নিয়মে আমার পোষায় না। আবার ফিরে যেতে চাই মিডিয়াতে। ভরসা পাইনা।
আজ তার জন্মদিন
১৯৯৬ সালের নভেম্বরের প্রথম দিন বিয়ে হয় আমাদের। আমি তখন কার্যক্ষেত্রে শ্রীমঙ্গলে থাকি। তো, বিয়ের পর এই কূলে আমি আর ওই কূলে তুমি অবস্থা ছিল আমাদের। পড়াশুনার কারনে তিনি প্রায়ই বাবার বাড়ি থাকতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ হলে চলে আসতেন আমাদের বাসায়। কুমিল্লাতে। আমি সপ্তাহান্তে ঢাকা মাড়িয়ে নারায়ণগঞ্জ বা কুমিল্লা যেতাম। কোথায় যাবো সেটা নির্ভর করত তেনার অবস্থানের উপর।